Thursday, October 19, 2017

অন্তরে তুমি আছ চির দিন

অন্তরে তুমি আছ চির দিন ওগো অন্তর্যামী
বাহিরে বৃথাই যত খুজি তা-ই
পাই না তোমায় আমি।।

প্রানের মতন আত্মার সম
আমাতে আছ হে অন্তরতম
মন্দির রচি বিগ্রহ পুজি দেখে হাস তুমি স্বামী।।

সমীরন সম আলোর মতন বিশ্বে রয়েছ ছড়ায়ে
গন্ধ কুসুম সৌরভ সম
প্রানে প্রানে আছো জড়ায়ে

তুমি বহুরুপী  তুমি রূপহীন
তব লীলা হেরি অন্ত বিহীন
তব লুকোচুরি খেলা সহচরী
আমি যে বিদস জামি।।

ভুলি কেমনে আজো যে মনে


ভুলি কেমনে আজো যে মনে বেদনা সনে রহিল আঁকা
আজো সজনী দিন রজনী সে বিনে গনি সকলি ফাঁকা।।

আগে মন করলে চুরি মর্মে শেষে হানলে ‍ছুরি
এত শঠতা এত যে ব্যাথা তবু যেন তা মধুতে মাখা।।

চকোরী দেখলে চাদে দুর হতে সই আজো কাঁদে
আজো বাদলে, ঝুলন ঝোলে তোমনি জলে চলে বলাকা।।

বকুলের তলায় দোদুল কাজলা মেয়ে কুড়োয় লো ফুল
চলে নাগরী কাখে গাগরী চরণ ভারি কোমর বাঁকা।।

ডালে তোর করলে আঘাত দিস্ রে কবি ফুল সওগাত
ব্যাথা মুকুলে অলি না ছুলে বনে কি দুলে, ফুল পতাকা।।

অরুন রাঙ্গা গোলাপ-কলি


অরুন রাঙ্গা গোলাপ-কলি
কে নিবি সহেলী আয়
গালে যার গোলাপি আভা
এ ফুল কলি তারে চায়।।

ডালির ফুল যে শুকায়ে যায়
কোথায় লায়লী শিরি কোথায়
কোথায় প্রেমিক বিরহী মজনু
এ ফুল দেব কাহার পায়।।

পূর্ন চাদের এমন তিথি
ফুল বিলাসী কই অতিথি
বুলবুলি বিনে এ গুলযে
অভিমানে মুরছায়।।

সেদিন বলেছিলেসেই সে ফুলবনে

সেদিন ব'লেছিলে এই সে ফুলবনে
আবার হবে দেখা ফাগুনে তব সনে।।

ফাগুন এলো ফিরে লাগে না মন কাজে,
আমার হিয়া ভরি, উদাসী বেণু বাজে;
শুধাই তব কথা দখিনা সমীরণে।।
শপথ ভুলিয়াছ বন্ধু, ভুলিলে পথ কি গো
বারেক দিয়ে দেখা লুকালে মায়ামৃগ।
আঁচলে ফুল লয়ে হল' না মালা গাঁথা,
আসার পথ তব ঢাকিল ঝরা পাতা;
পূজার চন্দন শুকালো অঙ্গনে।।
সেদিন ব'লেছিলে এই সে ফুলবনে
তাল : দাদ্‌রা
কথা : কাজী নজরুল ইসলাম
সুর : শৈলেশ দত্তগুপ্ত

দুর দ্বীপ-বাসিনী


দুর দ্বীপ-বাসিনী, চিনি তোমারে চিনি
দারুচিনির দেশে তুমি বিদেশিনী গো,
সুমন্দ ভাষিনী।।

প্রশান্ত সাগরে – তুফানে ও ঝড়ে
শুনেছি তোমারি অশান্ত রাগিনী।।

বাজাও কি বুনো সুর পাহাড়ি বাঁশিতে
বনান্ত ছেয়ে যায় বাসন্তি হাসিতে
তব কবরী-মূলে নব এলাচির ফুল
দুলে কুসুম-বিলাসীনি।।

জাগো সাকি হাম দরদী

জাগো সাকি হাম দরদী জাম বাটিতে দাও শারাব
চুলোয় যাক এই দুঃখ ব্যাথা ধুলোয় ঢাকুক সব অভাব।।
 
ভর পেয়ালা দাস্তে দে দোস্ত মাস্ত হয়ে বুদ সেই নেশায়
দি ফেলে এই শির হতে  ওই সুনীল আকাশ গাঠরিটায়।।
 
ভয় কি সখি করবে নিন্দা শাস্ত্র শকুন বন্ধুরা
বদনামে মোর পরোয়া থোড়াই চালাও পানসী দাও সুরা।
 
সব অজানা জানার মাঝে দিল দরদী ফিরনু ভাই
দুনিয়া ঘুরে দেখনু ঢুড়ে দিল দরদী বন্ধু নাই।।
 
 গুলবাগে আর দেবদারুকে দেখতে কারুর রয় না সাধ,
দেখলে প্রিয়ার সরল ছাঁদ আর চাঁদনি-সফেদ বদন-চাঁদ!
 
দিবানিশি পাস যে ব্যথা, ওরে হাফিজ, দু-দিন থাম!
আসবে প্রিয়া দিল্-জানিয়া, পূর্ণ হবে মনস্কাম!

আবার ভালবাসার সাধ জাগে

আবার ভালবাসার সাধ জাগে
সেই পুরাতন চাঁদ
আমার চোখে আজ নুতন লাগে।।

যে ফুল দলিয়াছি নিঠুর পায়ে
সাধ যায় ধরি তারে বক্ষে জড়ায়ে
উদাসীন হিয়া হায় রেঙ্গে ওঠে অবেলায়
সোনার গোধুলি রাগে।।

আবার ফাগুন সমীর কেন বহে
আমার ভুবন ভরি কেঁদে ওঠে বাঁশরী
অসীম বিরহে।

তপোবনের বুকে ঝর্নার সম
কে এলে সহসা হে প্রিয়তম
মাথুরের গোকুল সহসা রাঙ্গাইলে
রাসের কুঙ্কুম ফাগে।।

মোরে ডেকে লও সেই দেশে

মোরে ডেকে লও সেই দেশে প্রিয় যে দেশে তুমি থাক।
মোর কি কাজ জীবনে বঁধূ যদি তুমি কাছে নাহি ডাক।।

        এই পৃথিবীর হাসি গান
বঁধূ সব হয়ে যায় ম্লান,
মধু-মাধবী রাসের তিথি হায় ! মাধব এলে নাকো।।

এত আত্মীয় প্রিয়জন মোর কিছু নাহি ভাল লাগে,
ভীড় রহে না প্রেমের নীড়ে সেথা দুটি পাখি শুধু জাগে।
ফুল তুলিয়া পূজার তরে
কেন ফেলে রাখ হেলা ভরে
তার মরণের আগে বঁধূ শুধু বারেক চরণে রাখ।।

Sunday, August 20, 2017

আমি চিরতরে দূরে চলে যাব

Cm

আমি চিরতরে দূরে চলে যাব,
তবু আমারে দেব না ভুলিতে।
আমি বাতাস হইয়া জড়াইব কেশ,
বেণী যাবে যবে খুলিতে।। 

তোমার সুরের নেশায় যখন
ঝিমাবে আকাশ কাঁদিবে পবন,
রোদন হইয়া আসিব তখন 
তোমার বক্ষে দুলিতে। 

আসিবে তোমার পরমোৎসবে 
কত প্রিয়জন কে জানে,
মনে ড়ে যাবেকোন্সে ভিখারী
পায়নি ভিক্ষা এখানে। 

তোমার কুঞ্জ-পথে যেতে, হায়!
চমকিথামিয়া যাবে বেদনায়
দেখিবে, কে যেন রে মিশে আছে
তোমার পথের ধূলিতে।

Friday, May 26, 2017

তৌহীদেরই মুর্শিদ আমার

তৌহীদেরই মুর্শিদ আমার মোহাম্মদের নাম
নাম জপলে বুঝতে পারি খোদায়ী কালাম।।


নামেরই রশি ধরে যাই আল্লর পথে
নামেরই ভেলায় চড়ে ভাসি নুরের শ্রোতে
নামের বাতি জ্বেলে দেখি আরশের মোকাম।।

নামের দামান ধরে আছি আমার কিসের ভয়
নামের গুনে পাবো আমি খোদার পরিচয়
তার কদম মোবারক যে আমার বেহেশতী তাঞ্জাম।

ইয়া মোহাম্মাদ বেহেশত হতে

ইয়া মোহাম্মাদ বেহেশত হতে খোদায় পাওয়ার পথ দেখাও
এই দুনিয়ার দুঃখ থেকে এবার আমায় নাজাত দাও।।

পীর মুর্শিদ পাইনি আমি , তাই তোমায় ডাকি দিবস যামী
তোমারই না ম হউক হজরত, আমার পরপারের নাও।।

অর্থ-বিভব-জশ-সম্মান চেয়ে চেয়ে নিশিদিন
দুখ শোকে জ্বলে মরি পরান কাদে শ্রন্তিহীন।

আল্লাহ ছাড়া ত্রিভুবনে, শান্তি পাওয়া যায়না মনে
কোথায় পাব সে আবহায়াত ইয়া নবীজী রাহ্ বাতাও।।

এ কোন মধুর শরাব দিলে

কোন মধুর শরাব দিলে আল্‌-আরাবী সাকী
নেশায় হলাম দীওয়ানা যে, রঙিন হল আঁখি।।

তৌহীদের শিরাজী নিয়ে
ডাকলে সবায়, ‘যারে পিয়ে
নিখিল জগৎ ছুটে এল, রইল না কেউ বাকি।।

বসল তোমার মহ্ফিল দূর মক্কা মদিনাতে
আল্‌-কোরআনের গাইলে গজল শবে-কদর রাতে।

নর-নারী বাদশা ফকির
তোমার রূপে হয়ে অধীর
যা ছিল নজরানা দিল রাঙা পায়ে রাখি।

Thursday, May 11, 2017

নুরের দরিয়ায় সিনান করিয়া

নুরের দরিয়ায় সিনান করিয়া কে এল মক্কায় আমিনার কোলে
ফাগুন পুর্ণিমা নিশীথে যেমন আসমানের কোলে রাঙা চাঁদ দোলে।।

কে এলো কেএলো গাহে কোয়েলিয়া
পাপিয়া বুলবুল উঠিল মাতিয়া
গ্রহতারা ঝুকে করিছে কুর্ণিশ হুরপরী হেসে পড়িছে ঢলে।।

জিন্নাতের আজ খোলা দরওয়াজা পেয়ে
ফেরেশতা আম্বিয়া এসেছে ধেয়ে,
তাহরীমা বেধে ঘোরে দরুদ গেয়ে
দুনিয়া টলমল খোদার আরশ টলে।

এলোরে চির চাওয়া এল আখেরি নবী
সৈয়দে মক্কী মাদানী আল আরবী
নাজেল হয়ে সেযে ইয়াকুত রাঙা ঠোটে
শাহাদাতের বানী আধো আধো বোলে।।

মুহাম্মাদ নাম যতই জপি ততই মধুর লাগে

D#

মুহাম্মাদ নাম যতই জপি ততই মধুর লাগে
নাম এত মধু থাকে কে জানিতো আগে ॥

ঐ নামেরি মধু চাহি / মন ভ্রমরা বেড়ায় গাহি
আমার ক্ষুধা তৃষ্ণা নাহি / (ঐ) নামের অনুরাগে ॥

ও নাম প্রানের প্রিয়তম / ও নাম জপি মজনু সম
ঐ নামে পাপিয়া গাহে / প্রানের গোণাপ বাগে ॥

আমি ঐ নামে মুসাফির রাহি / চাইনা তখ্ত শাহানশাহী
নিত্য ও নাম ইয়া ইলাহি /  যেন হৃদে জাগে ॥

আল্লাহ্, নামের বীজ বুনেছি

(আমি) আল্লাহ্, নামের বীজ বুনেছি, এবার মনের মাঠে
ফলবে ফসল বেচব তারে কেয়ামতের হাটে।।

পত্তনীদার যে এই জমির/ খাজনা দিয়ে সেই নবীজীর
বেহেশতেরী তালুক কিনে, বসব সোনার খাটে (রে)।।

মসজিদে মোর মরাই বাঁধা, হবেনাকো চুরি
মনকির নাকির দুই ফেরেশ্তা, হিসাব রাখে জুড়ি’রে।

রাখবো হেফাজতের তরে/ ঈমানকে মোর সাথি করে
রদ হবে না কিস্তি  (মোর), জমি উঠবেনা আর লাটে (রে) ।।

খোদা এই গরীবের শোন শোন মোনাজাত

খোদা এই গরীবের শোন শোন মোনাজাত
দিও তৃষ্ণা পেলে ঠান্ডা পানি ক্ষুধা পেলে লবন ভাত।।

মাঠে সোনার ফসল দিয়ো গৃহ ভরা বন্ধু প্রিয়
হৃদয় ভরা শান্তি দিও সেইতো আমার আবহায়াত।।

আমায় দিয়ে কারও ক্ষতি হয়না যেন দুনিয়ায়
আমি কারুর ভয় না করি মোরেও কেহ ভয় না পায়  (খোদা)

মসজিদে যাই তোমার টানে (যেন) মন নাহি ধায় দুনিয়া পানে
আমি ঈদের চাঁদ দেখি যেন, আসলে দুঃখের আধার রাত।।

খোদার প্রেমে শারাব পিয়ে

খোদার প্রেমে শারাব পিয়ে বেহুঁশ হয়ে রই পড়ে
ছেড়ে মসজিদ আমার মুর্শিদ এল যে এই পথ ধরে।।

দুনিয়াদারীর শেষে আমার নামাজ রোজার বদলাতে
চাইনা বেহেশত খোদার কাছে নিত্য মুনাজাত করে।।

কয়েস যেমন লাইলি লাগি লভিল মজনু খেতাব
যেমন ফরহাদ শিরির প্রেমে হল দিওয়ানা বেতাব
বে-খুদী দে মশগুল আমি তেমনি মোর খোদার তরে।।

হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড় আজ

C
হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড় আজ
দিলাম তোমার চরন তলে হৃদয়-জায়নামাজ ।।

আমি গুনাহগার বেখবর নামাজ পড়ার নাই অবসর
(তব) চরন ছোয়ায় এই পাপিরে কর সরফরাজ।।

তোমার অজুর পানি মোছ আমার পিরান দিয়ে
আমার এ ঘর হোক মসজিদ তোমার পরশ নিয়ে।

যে শয়তানের ফন্দিতে ভাই
খোদায় ডাকার  সময় না পাই
সেই শয়তান যাক দুরে
শুনে তকবীরের আওয়াজ।।

Tuesday, May 9, 2017

এ কি সুরে তুমি গান শোনালে  ভিনদেশী পাখী

এ কি সুরে কোন সুরে
এ কি সুরে তুমি গান শোনালে  ভিনদেশী পাখী
এ যে সুর নহে মদির সূরা,  রে সুরের সাকী।।

বসি মোর জানালা পাশে
কেন বুক ভাঙ্গা নিরাশে
যাও ঘুম ভাঙ্গায়ে নিতি
সকরুণ সুরে ডাকি
একি সুরে...।।

তোরও সুরে কাঁদছে ঊষা
অস্ত চাঁদের গলা ধরে,
ভোর গগনের কপোল বেয়ে
শিশির অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।

আমি রইতে নারি ঘরে
আমার মন যে কেমন করে
আমার মন লাগেনা কাজে
আর জলে ভরে আঁখি
একি সুরে...।।

Tuesday, May 2, 2017

মুসাফির মোছরে আঁখি জল

মুসাফির মোছরে আঁখি জল ফিরে চল আপনারে নিয়া
আপনি ফুটেছিল ফুল গিয়াছে আপনি ঝরিয়া।।

রে পাগল একি দুরাশা জলে তুই বাধিলি বাসা
মেটেনা হেথায় পিয়াস হেথা নাই তৃষা দরিয়া।

বরষায় ফুটল না বকুল পউষে ফুটবে কি সে ফুল
এ দেশে ঝরে শুধু ভুল নিরাশার কানন ভরিয়া।।

রে কবি কতই দেয়ালি জ্বালিলি তোর আলো জ্বালি
এলনা তোর বনমালী আধার আজ তোরই দুনিয়া।।

খেলিছো এ বিশ্ব লয়ে

Cm
খেলিছো এ বিশ্ব লয়ে বিরাট শিশু আনমনে
প্রলয় সৃষ্টি তব পুতুল খেলা নিরজনে প্রভু নিরজনে।।

শুন্যে মহা আকাশে তুমি মগ্ন লিলা বিলাসে
ভাঙ্গিছ গড়িছ নিতি ক্ষনে ক্ষনে।।

তারকা রবি শশি খেলনা তব হে উদাসী
পড়িয়া আছে রাঙ্গা পায়ের কাছে রাশি রাশি।

নিত্য তুমি হে উদাস সুখে দুঃখে অ-বিকার
হাসিছ খেলিছ তুমি আপন মনে।।

তোমায় যদি পেয়ে হারাই

তোমায় যদি পেয়ে হারাই নাইবা পেলাম তবে
নেইকো আশা সারা জীবন তুমি আমার হবে।।

তাইতো তোমায় মালার ডোরে
বাঁধিনিকো নিবিঢ় করে
দুর আকাশের চাঁদকে বলো কে পেয়েছে কবে।।

সুক্লা রাতির চেয়ে আমার কৃষ্ণা তিথি ভালো
চাঁদের চেয়ে ভালো আমার মাটির দীপের আলো।

তুমি হ’য়ো প্রদীপ শিখা
চির কালের বাসন্তিকা
ফুলের বনে চাইনা তোমায় মনের বনে রবে।।

তোমার কুসুম বনে

তোমার কুসুম বনে আমি আসিয়াছি ভুলে
তবু মুখপানে প্রিয় চাহ মুখ তুলে।।

দেখি সে-দিনের সম,
ওগো ভুলে-যাওয়া স্মৃতি মম
তব ও-নয়নে আজও ওঠে কি-না দুলে।।

 ওগো ভুল করে আসিয়াছি, জানি ভুলেছ, তুমিও
তবু ক্ষণেকের তরে সে-ভুল ভেঙো না প্রিয়
তীর্থে এসেছি মম দেবীর দেউলে।।
 
তোমার মাধবী-রাতে, আসিনি আমি কাঁদাতে
কাঁদিতে এসেছি একা বিদায়-নদীর কূলে।।
 
রাগ : খাম্বাজ মিশ্র,
তাল : কাহারবা
আদি রেকর্ডিং : ১৯৩৪
কথা ও সুর : কাজী নজরুল ইসলাম
শিল্পী : নিতাই ঘটক
 

পরদেশী মেঘ যাওরে ফিরে

পরদেশী মেঘ যাওরে ফিরে
বলিও আমার পরদেশীরে।।

সেদেশে যবে বাদল ঝড়ে
কাঁদেনা কি প্রান একেলা ঘরে
বিরহ ব্যাথা নাহি কি সেথা
বাজেনা বাঁশী নদীর তীরে।।

বাদল রাতে ডাকিলে পিয়া
ডাকিলে পিয়া পিয়া পাপিয়া
বেদনায় ভরে ওঠে নাকি রে কাহার হিয়া।

ফোটে যবে ফুল ওঠে যবে চাঁদ
জাগেনা সেথা কি প্রানে কোন সাধ
দেয়না কেহ গুরু গঞ্জনা
সে দেশে বুঝি কুলবতি রে।।

মনে পরে আজ সে কোন জনমে

মনে পরে আজ সে কোন জনমে বিদায় সন্ধ্যা বেলা
আমি দাড়ায়ে রহিনু ওপারে তুমি ওপারে ভাসালে ভেলা।।

সেই সে বিদায় ক্ষনে
সপথ করিলে বন্ধু আমায় রাখিবে আমারে মনে
ফিরিয়া আসিবে খেলিবে আবার সেই পুরাতন খেলা।।

আজো আসিলে না হায়
মোর অশ্র“র লিপি বনের বিহগী দিকে দিকে লয়ে যায়
তোমারে খুজে না পায়।

মোর গানের পাপিয়া ঝুরে
গহন কাননে তব নাম লয়ে আজো পিয়া পিয়া সুরে
গান থেমে যায় হায় ফিরে আসে পাখি
বুকে বিঁধে অবহেলা।।

মন জপ নাম শ্রী রঘুপতি রাম

মন জপ নাম শ্রী রঘুপতি রাম
নব দুর্বাদল শ্যাম নয়নাভিরাম।।

সুরাসুর কিন্নর যোগী মুনি ঋষি নর
চরাচর যে নাম জপে অবিরাম।।

সজল জলদ নীল নবঘন কান্তি
নয়নে করুনা আননে প্রশান্তি। 

নাম স্বরনে টুটে যায় শেকতাপ ভ্রান্তি
রুপ নেহারি মুরছিত কোটি কাম।।

Monday, May 1, 2017

চোখের নেশার ভালবাসা

চোখের নেশার ভালবাসা সোকি কভু থাকে গো
জাগিয়া স্বপনের স্মৃতি স্মরনে কে রাখে গো।।

তোমরা ভোল গো যারে চিরতরে ভোল তারে
মেঘ গেলে আবছায়া থাকে কি আকাশে গো।।

পুতুল লইয়া খেলা খেলিছ বালিকা বেলা
খেলিছ পরাণ লয়ে তেমনি পুতুল খেলা
ভাঙিছ গড়িছ নিতি হৃদয় দেবতারে গো।।

চোখের ভালবাসা গ’লে
শেষ হয়ে যায় চোখের জলে
বুকের ছলনা সেকি নয়ন জলে ঢাকে গো।।

তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি

তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়, সে কি মোর অপরাধ?
চাঁদেরে হেরিয়া কাঁদে চকোরিণী বলে না তো কিছু চাঁদ।।

চেয়ে’ চেয়ে’ দেখি ফোটে যবে ফুল
ফুল বলে না তো সে আমার ভুল
মেঘ হেরি’ ঝুরে’ চাতকিনী, মেঘ করে না তো প্রতিবাদ।।
জানে সূর্যেরে পাবে না তবু অবুঝ সূর্যমুখী
চেয়ে’ চেয়ে’ দেখে তার দেবতারে দেখিয়াই সে যে সুখী।
হেরিতে তোমার রূপ-মনোহর
পেয়েছি এ আঁখি, ওগো সুন্দর।
মিটিতে দাও হে প্রিয়তম মোর নয়নের সেই সাধ।।

তাল : দাদরা
আদি রেকর্ডিং : ১৯৪২
কথা ও সুর : কাজী নজরুল ইসলাম
শিল্পী : চিত্ত রায়

একেলা গোরী জলকে চলে গঙ্গা তীর

একেলা গোরী জলকে চলে গঙ্গা তীর
অঙ্গে ঢুলিয়া পড়ে লালসে অলস অধীর।।

কাকনে কলসে বাজে - কত কথা পথ মাঝে
আচল চুমিছে শিশির।।

তটিনীতে চলে কিগো- সোনার বরন মায়া মৃগ
নয়নে আবেশ-মদির।।

আলগা করো গো খোপার বাধন

C
আলগা করো গো খোঁপার বাঁধন
দিল ওহি মেরা ফঁস গ্যায়ি
বিনোদ বেনীর জরীন ফিতায়
আন্ধা এশক মেরা কস গ্যায়ি।।


তোমার কেশের গন্ধে কখন
লুকায়ে আসিল লোভী আমার মন
বেহুঁশ হো কর গিড় পড়ি হাথমে
বাজুবন্দ মে বস গ্যায়ি।।


 কানের দুলে প্রান রাখিলে বিঁধিয়া
আঁখ ফিরা দিয়া চোরি কর নিদিয়া
দেহের দেউড়িতে বেড়াতে আসিয়া
আউর নেহি ও ওয়াপস গ্যায়ি।।

এত জল ও কাজল চোখে

এত জল ও – কাজল চোখে পাষানী আনলে বল কে ?
টলমল জল মোতির মালা দুলিছে ঝালর –পলকে ।।
 
দিল কি পুব – হাওয়াতে দোল , বুকে কি বিঁধিল কেয়া ?
কাঁদিয়া কুটিরে গগন এলায়ে ঝামর অলকে।।
 
চলিতে পৈচি কি হাতের বাধিল বৈচি কাটাতে ?
ছাড়াতে কাচুলির কাঁটা বিধিল হিয়ার ফলকে ।।
 
যে দিনে মোর দেওয়া – মালা ছিঁড়িলে আনমনে সখি ,
জড়াল যুঁই – কিসুমী – হাড় বেণীতে সেদিন গুলো কে ।।
 
যে পথে নীর ভরণে যাও বসে রই সে পথ – পাশে
দেখি নিত কার পানে চাহি কলসীর সলিল ছলকে ।।
 
মুকুলী মন সেধে সেধে কেবলি ফিরিনু কেদে ,
সরসীর ঢেউ পলায় ছুটি না ছুতেই নলিন – নোলকে ।।

বুকে তোর সাত সাগরের জল পিপাসা মিটল না কবি ,
ফটিক – জল ! জল খুঁজিস যেথায়
কেবলি তড়িৎ ঝলকে ।।
 
( মান্দ – কাওয়ালী )

হারানো হিয়ার নিকুঞ্জপথে

হারানো হিয়ার নিকুঞ্জপথে কুড়াই ঝরা ফুল একেলা আমি
তুমি কেন হায় আসিলে হেথায় সুখের স্বরগ হইতে নামি।।

চারিদিকে মোর উড়িছে কেবল শূকনো পাতা মলিন ফুল-দল
বৃথাই কেন হায় তব আখি জল ছিটাও অবিরল দিবস-যামী।।

এলে অবেলায় পথিক বেভুল বিধিছে কাটা নাহি যবে ফুল
কি দিয়ে বরন করি ও চরণ, নিভেছে জীবন, জীবন স্বামী।।

পায়ে বিধেছে কাঁটা সজনী ধীরে চল

পায়ে বিধেছে কাঁটা সজনী ধীরে চল
চলিতে ছলকি যায় ঘটে জল ছল ছল
ধীরে ধীরে ধীরে চল।।

একে পথ আঁকাবাঁকা তাহে কন্টক শাখা
আচল ধরে টানে, টলে তনু টলমল।।

ভরা যৌবন তরী তাহে ভরা গাগরি
বুঝি হয় ভরা ডুবি ছি ছি আমার একি হ’ল।

পথের বাঁকে ওকে হাঁসে ডাগর চোখে
হাসিবে পথের লোকে সখি সরে যেতে বল।।

জাগো সাকি হাম দরদী

জাগো সাকি হাম দরদী জাম বাটিতে দাও শারাব
চুলোয় যাক এই দুঃখ ব্যাথা ধুলোয় ঢাকুক সব অভাব।।

ভর পেয়ালা দাস্তে দে দোস্ত মাস্ত হয়ে বুদ সেই নেশায়
দি ফেলে এই শির হতে  ওই সুনীল আকাশ গাঠরিটায়।।

ভয় কি সখি করবে নিন্দা শাস্ত্র শকুন বন্ধুরা
বদনামে মোর পরোয়া থোড়াই চালাও পানসী দাও সুরা।
সব অজানা জানার মাঝে দিল দরদী ফিরনু ভাই
দুনিয়া ঘুরে দেখনু ঢুড়ে দিল দরদী বন্ধু নাই।।

গুলবাগে আর দেবদারুতে দেখতে কারো হয়না সাধ
দেখলে প্রিয়ার সকল 

আমার কোন কুলে আজ ভিড়লো তরী

আমার কোন কুলে আজ ভিড়লো তরী
কোন সোনার গাঁয়
আমার ভাটির তরী আবার কেন
উজান যেতে চায়।।

দুঃখেরে কান্ডারী করি
আমি ভাসিয়েছিলাম ভাঙা তরী
তুমি ডাক দিলে কোন স্বপন পরী
নয়ন ইশারায়।।

নিভিয়ে দিয়ে ঘরের বাতি
ডেকেছিলে ঝড়ের রাতি
তুমি কে এলে মোরে সুরের সাথী
গানের কিনারায়।

সোনার দেশের সোনার মেয়ে
তুমি হবে কি মোর তরীরে নেয়ে
ভাঙা তরী চলো বেয়ে
রাঙা অলকায়।।