Sunday, January 28, 2018

বক্ষে আমার কাবার ছবি

বক্ষে আমার কাবার ছবি,
চক্ষে মোহাম্মদ রাসুল।
শিরোপরি মোর খদার আরশ
গাই তারি গান পথ বেভুল।।

পাইলির প্রেমে মজনু পাগল,
আমি পাগল 'লা- ইলা',
প্রেমিক দরবেশ আমায় চিনে
-রসিকে কয় বাতুল।।

হৃদয়ে মোর খুশীর বাগান,
বুলবুলি তায় গায় সদাই-
ওরা খোদার রহম মাগে
আমি খোদার 'ইশক' চাই।।


আমার মনের মসজিদে দেয়
আজান হাজার 'মুয়াজ্জিন',
প্রানের 'লওহে' কোরান লেখা
'রুহ' পড়ে তা রাত্রিদিন।


খাতুনি জিন্নত আমার মা,
হাসান হোসেন চোখের জল,
ভয় করিনা রোজ- কিয়ামত
পুল- সিরাতের কঠিন পুল।।



আদি রেকর্ডিং- ১৯৩২
শিল্পীঃ মহম্মদ কাশেম (কে মল্লিক)

রসুল নামের ফুল এনেছি রে

রসুল নামের ফুল এনেছি রে (আয়) গাঁথবি মালা কে
এই মালা নিয়ে রাখবি বেঁধে আল্লা তালাকে॥
  
  অতি অল্প ইহার দাম
    শুধু আল্লা রসুল নাম
এই মালা প’রে দুঃখ শোকের ভুলবি জ্বালাকে॥


এই ফুল ফোটে ভাই দিনে রাতে (ভাইরে ভাই) হাতের কাছে তোর
ও তুই কাঁটা নিয়ে দিন কাটালি রে তাই রাত হ’ল না ভোর।


    এর সুগন্ধ আর রূপ র’য়ে যায়
    নিত্য এসে তোর দরজায় রে
পেয়ে ভাতের থালা ভুললি রে তুই চাঁদের থালাকে॥


আদি রেকর্ডিং- ১৯৪৮
শিল্পীঃ বেদারউদ্দিন আহমদ।


জাতের নামে বজ্জাতি সব

জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া,
ছুঁলেই তোর জাত যাবে? জাত ছেলের হাতের নয়তো মোয়া।

হুঁকোর জল আর ভাতের হাঁড়ি – ভাব্‌লি এতেই জাতির জান,
তাইত বেকুব, করলি তোরা এক জাতিকে একশ’-খান।
এখন দেখিস ভারত জোড়া পঁচে আছিস বাসি মড়া,
মানুষ নাই আজ, আছে শুধু জাত-শেয়ালের হুক্কাহুয়া।
জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া।।

জানিস নাকি ধর্ম সে যে বর্ম সম সহন-শীল,
তাকে কি ভাই ভাঙ্‌তে পারে ছোঁয়া ছুঁয়ির ছোট্ট ঢিল!
যে জাত-ধর্ম ঠুন্‌কো এত, আজ নয় কা’ল ভাঙবে সে ত,
যাক্‌ না সে জাত জাহান্নামে, রইবে মানুষ, নাই পরোয়া।
জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া।।

বলতে পারিস, বিশ্ব-পিতা ভগবানের কোন সে জাত?
কোন্‌ ছেলের তার লাগলে ছোঁয়া অশুচি হন জগন্নাথ?
ভগবানের জাত যদি নাই তোদের কেন জাতের বালাই?
ছেলের মুখে থুথু দিয়ে মার মুখে দিস ধূপের ধোঁয়া।
জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া।




আদি রেকর্ডিং- ১৯৪২
শিল্পীঃ মৃনাল কান্তি ঘোষ।

Friday, January 19, 2018

নবীর মাঝে রবির সম আমার মোহাম্মদ রসুল


নবীর মাঝে রবির সম আমার মোহাম্মদ রসুল।

খোদার হবিব দীনের নকিব বিশ্বে নাই যার সমতুল।।



     পাক আরশের পাশে খোদার

     গৌরবময় আসন যাঁহার,

খোশ-নসীব উম্মত আমি তাঁর (আমি) পেয়েছি অকূলে কূল।।



     আনিলেন যিনি খোদার সালাম;

     তাঁর কদমে হাজার সালাম;

ফকির দরবেশ জপি' সেই নাম (সবে) ঘর ছেড়ে হলো বাউল।।



     জানি, উম্মত আমি গুনাহগার

     হবো তবু পুলসরাত পার;

আমার নবী হযরত আমার করো মোনাজাত কবুল।।

পুবাল হাওয়া পশ্চিমে যাও কাবার পথে বইয়া

পুবাল হাওয়া পশ্চিমে যাও কাবার পথে বইয়া।
যাও রে বইয়া এই গরীবের সালামখানি লইয়া।।
কাবার জিয়ারতের আমার নাই সম্বল ভাই,
সারা জনম সাধ ছিল যে, মদিনাতে যাই ( রে ভাই)।
মিটল না সাধ, দিন গেল মোর দুনিয়ার বোঝা বইয়া।।

তোমার পানির সাথে লইয়া যাও রে আমার চোখের পানি,
লইয়া যাওরে এই নিরাশের দীর্ঘ নিশ্বাসখানি।
নবীজীর রওজায় কাঁদিও ভাই রে আমার হইয়া।।

মা ফাতেমা হযরত আলীর মাজার যেথায় আছে,
আমার সালাম দিয়া আইস তাঁদের পায়ের কাছে।
কাবায় মোজানাজাত করিও আমার কথা কইয়া।।


আদি বেকর্ডিং- বেদারউদ্দিন আহম্মেদ (১৯৪৮)

Wednesday, January 17, 2018

বুলবুলি নীরব নার্গিস বনে


বুলবুলি নীরব নার্গিস বনে
ঝরা বন গোলাপের বিলাপ শোনে ।।

শিরাজের নওরোজে ফাল্গুন মাসে
যেন তার প্রিয়ার সমাধির পাশে
তরুন ইরান কবি কাঁদে নিরজনে ।।

উদাসীন আকাশ থির হয়ে আছে
জল ভরা মেঘ লয়ে বুকের কাছে

সাকীর শারাবের পিয়ালার পরে
সকরুন অশ্রুর বেলফুল ঝরে
চেয়ে আছে ভাঙ্গা চাঁদ মলিন আননে ।।

Friday, January 12, 2018

রাস-মঞ্চে, দোল-দোল লাগে রে

রাস-মঞ্চে,
দোল-দোল লাগে রে, লাগে রে, 
জাগে ঘুর্ণি-নৃত্যের দোল।
আজি রাস-নৃত্য নিরাশ চিত্ত জাগো রে,
চল যুগলে যুগলে বন-ভবনে-
আনো নিথর হেমন্ত হিম পবনে
চঞ্চল হিল্লোল।।

শতরূপে প্রকাশ আজি শ্রী হরি
শত দিকে শত সুরে বাজে বাঁশরি-
সকল গোপিনী আজি রাই কিশোরী.-
যাবে তৃষ্ণা, পাবে কৃষ্ণের কোল।।

তরল তাল ছন্দ-দুলাল নন্দ-দুলাল নাচে রে
অপরূপ রঙ্গে নৃত্য-বিভঙ্গে অঙ্গের পরশ যাচে রে;
মানস-গঙ্গা অধীর-তরঙ্গা
প্রেমের যমুনা হ’ল রে উতরোল।।





আদি রেকর্ড: অক্টোবর, ১০৩৫
শিল্পী: মিস হরিমতি দেবী
নাটক চক্রব্যূহ (১৯৩4)
রেকর্ড নং-HMV N-7418

Tuesday, January 2, 2018

নয়নে তোমার ভীরু মাধুরীর মায়া

নয়নে তোমার ভীরু মাধুরীর মায়া
বন-মৃগী সম উঠিছ চমকি' হেরিয়া আপন ছায়া।।

প্রাতে উষার প্রায়
রেঙে উঠো লজ্জায়,
এলায়িত লতিকায় ভঙ্গুর তব কায়া।।

দৃষ্টিতে তব আরতি-দীপের দ্যুতি
তুমি নিবেদিতা সন্ধ্যা-পূজা-আরতি।

ভূমি অবলুন্ঠিতা
বনলতা কুন্ঠিতা
কোলাহল-শঙ্কিতা যেন গো তাপস জায়া।।

নিশি নিঝুম ঘুম নাহি আসে,


নিশি নিঝুম ঘুম নাহি আসে,
হে প্রিয়, কোথা তুমি দূর প্রবাসে।।


বিহগী ঘুমায় বিহগকোলে,
ঘুমায়েছে ফুলমালা শ্রান্ত আঁচলে;
ঢুলিছে রাতের তারা চাঁদের পাশে।।


ফুরায় দিনের কাজ, ফুরায় না রাতি,
শিয়রের দীপ হায় অভিমানে নিভে যায়
নিভিতে চাহে না নয়নের বাতি।


কহিতে নারি কথা তুলিয়া আঁখি
বিষাদমাখা মুখ গুন্ঠনে ঢাকি
দিন যায় দিন গুণে, নিশি যায় নিরাশে।।

এখনো ওঠেনি চাঁদ


এখনো ওঠেনি চাঁদ এখনো ফোটেনি তারা
এখনো দিনের কাজ হয়নি যে মোর সারা
হে পথিক যাও ফিরে।।


এখনো বাঁধিনি বেণী, তুলিনি এখনো ফুল
জ্বালি নাই মণিদীপ মম মনমন্দিরে
হে পথিক যাও ফিরে।।


পল্লবগুণ্ঠনে নিশিগন্ধার কলি
চাহিতে পারে না লাজে দিবস যায়নি বলি
এখনো ওঠেনি ঢেউ থির সারসির নীরে
হে পথিক যাও ফিরে।।


যবে ঝিমাইবে চাঁদ ঘুমে তখন তোমার লাগি
একা পথ চেয়ে বাতায়নপাশে জাগি
কবরীর মালা খুলে ফেলে দেব ধীরে ধীরে
হে পথিক যাও ফিরে।।